সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জে দু’ই গ্রুপের মধ্যে দু’ দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ আহত হয়েছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ও রাতে সুমিলপাড়া এলাকায়। এ ঘটনায় পুলিশ উভয় গ্রুপের ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে উভয় পক্ষই পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ৬নং ওয়ার্ডের অব্দুল হান্নানের সঙ্গে একই ওয়ার্ডের আক্তার হোসেন ওরফে পনি আক্তারে মধ্যে গ্যাস সিলেন্ডার জনিত একটি বিষয় নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে উভয় গ্রুপের লোকজন দেশী অস্ত্র চাপাতি, রামদা, রড, লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন। পরে একই দিন রাত সাড়ে ৯টায় আবারো একই এলাকায় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে হয়। তবে একটি পক্ষ দাবি করছে আব্দুল হান্নান নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের সমর্থক এবং আক্তার হোসেন ওরফে পানি একই ওয়ার্ডের বর্তমন কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির সমর্থক।
ঘটনার বিষয়ে নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি সাথে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, ঘটনার সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। গ্যাস সিলেন্ডারে একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। সংঘর্ষের একটি পক্ষ আপনার অনুসারী বলে জানা গেছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমা অনুসারী কথাটা ভুল। এরা সকলের দল করে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। এটা একটা ভুলবুঝাবুঝি মাত্র। আমি চেষ্টা করেছি ঘটনাটা যাতে আলোচনার মধ্যমে সমাধান করা যায়। তবে সেই পর্যায়ে যাওয়ার আগেই কেইস মামলা হয়ে গেছে। এর পূর্বেও সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের সাথে আপনার একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আগামীতে যাতে এহেন এই রকম কোন ঘটনা না ঘটে সেই বিষয়ে কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন সিরাজ মন্ডলের সাথে আমার কোন সমস্যা কিংবা ঝগড়া নেই। প্রকৃত বিষয় হলো এরা নব্য আওয়ামী লীগ। এর আগে এরা বিএনপি জামাতের রাজনীতি করতো। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো সেই সময়েই এদের বিরুদ্ধে থানায় একধিক মামলা করা হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় হৃদয়, ইব্রাহীম, রবিউল, রাসেল আহমেদ, জসিম, ইসমাইল, ইউসুফ, রাকিব, সাইদুল, শুভ, আরিফসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। রাতেই আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নগরীর খানপুর ৩’শ শয্যা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ বুধবার সকালে আক্তার হোসেন, মিজান, রবিন, বিল্লাল হোসেন, নুর হোসেন ও শামীম এবং সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের সমর্থক স্বপন, ফিরোজ আহমেদ, শাহাদাত হোসেন শাকিল, আব্দুল হান্নান, মিজানু রহমানকে গ্রেফতার করে।
এদিকে বুধবার বিকেলে শাহ আলম বাদী হয়ে ১৬ জন সমর্থকের নামে এবং অজ্ঞাত আরো ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের সমর্থক জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা ২৫ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুমিলপাড়া, এসও রোড ও আইলপাড়া এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীন শাহ পারভেজ জানায়, সিরাজ মন্ডলের সমর্থক আব্দুল হান্নানের সঙ্গে মতিউর রহমান মতির সমর্থক আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তারের মধ্যে পূর্বের বিরোধও রয়েছে। মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষই দু’টি মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।